সমস্যাগ্রস্ত শরিয়াভিত্তিক পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংককে একত্রিত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য চলতি সপ্তাহে একটি পাঁচ সদস্যের প্রশাসক টিম গঠন করা হবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ বোর্ড সভার পর মুখপাত্র মোঃ আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান। এর আগে, গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে এই সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যান্য বোর্ড মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন।জনপ্রিয় ব্যাংক ও বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই একীভূতকরণে সব পক্ষের সম্মতি রয়েছে, এবং এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণীত ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ’ অনুসারে সম্পন্ন হবে।আরিফ হোসেন খান বলেন, মার্জার বা একীভূতকরণ একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যার সম্পন্ন করতে সময় লাগবে প্রায় দুই বছর। তবে এর প্রথম ধাপের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত, এবং খুব শিগগিরই প্রক্রিয়াটি দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে।এক্রিয়াটি সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে পাঁচ সদস্যের একটি প্রশাসক টিম গঠন করা হবে, যা এই প্রক্রিয়ার পরিচালনা করবে। ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে বর্তমান ব্যবস্থাপনা দল, এবং প্রতিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাদের পদে অব্যাহত থাকবেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ার সময় ব্যাংকের পর্ষদ বা বোর্ড বিলুপ্ত হবে না, তবে তারা ধীরে ধীরে কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। প্রশাসকের দল তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি এবং আপডেট বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবে।আজকের বোর্ড সভায় আরও আলোচনা হয়েছে ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার এবং খেলাপি ঋণের নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে।সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে একটি নতুন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক, যার নাম হবে ‘ইউনাইটেড ইসলামি ব্যাংক’। এই নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিন ধরে এসব ব্যাংকের শুনানি শেষে, ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ইসলামি ও ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ একীভূত হওয়ার পক্ষে মত দেয়। কিন্তু সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে।প্রক্রিয়াটির অংশ হিসেবে, সরকার ৩৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে মোট ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা মূলধন বরাদ্দ দিয়েছে, যা এই সংযোজনের অর্থায়নে সহায়ক হবে। এটি দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনে সহায়তা করবে।
Leave a Reply